শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

| ১৩ চৈত্র ১৪৩০

কোথায় আছে এই দূর্দশা’র সমাপ্তি?

ডেস্ক অফিস

কোথায় আছে এই দূর্দশা’র সমাপ্তি?

মতামত:

অনেক আশা নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য চার বছর মেয়াদি কোর্সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। চার বছর শেষ হয়েছে, অথচ আমরা উচ্চশিক্ষা অর্জনের গণ্ডি এখনো অর্ধেক শেষ করতে পারলাম না। জানি না আরও চার বছরে শেষ করতে পারব কি না।

আমার সহপাঠী, যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, তাদের বেশির ভাগের চার বছর মেয়াদি কোর্স শেষ হয়ে গেছে। তারা এখন চাকরিপ্রার্থী, অনেকে চাকরি করে পরিবারের হাল ধরেছে।

আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কবে সেই চাকরির বাজারে প্রার্থী হতে পারব? কবে সেই চাকরি নামক সোনার হরিণের দেখা পাব? কবে আমার মতো মধ্যবিত্তের ছেলেরা পরিবারের হাল ধরতে পারবে? কবে মা–বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পারব?

মনে হচ্ছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করতে ৩০–৩২ বছর বয়স পার হয়ে যাবে। তারপর চাকরির বাজার বলবে, তুমি তো কবে চাকরির বয়স শেষ করে ফেলেছ! তখন উচ্চশিক্ষিত একজন ছাত্র বা ছাত্রীর কী দশা হবে, ভাবুন। কর্মজীবনে কোথায় জায়গা হবে তাদের?

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একটাই প্রশ্ন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যথাসময়ে কোর্স শেষ করতে পারলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন পারে না? নাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বছর বছর বিভিন্ন কোর্স (ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স) চালু করে বিভিন্ন বর্ষ থেকে ফরম ফিলাপ আর অ্যাডমিশনের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া?

যদি সেটা হয়ে থাকে, তাহলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য শিক্ষা–বাণিজ্য। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য যদি শিক্ষা–বাণিজ্য হয়, তাহলে সে দেশের মানুষ কি প্রকৃত শিক্ষা পাবে? সে দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে? সে দেশ কি প্রকৃত শিক্ষিত জাতি পাবে? যদি তা–ই হয়ে থাকে, তাহলে শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড—প্রবাদ থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

মনে হচ্ছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে। যার যা খুশি, যেভাবে খুশি সেভাবে চলছে; কারও কোনো দায়িত্ববোধ নেই। কেন আপনারা ২০–৩০ লাখ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করছেন এভাবে? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামটা যেন লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীর জীবনে অভিশাপ হয়ে আছে। কবে মুক্তি পাব আমরা এই অভিশাপ থেকে?

সোহেল উদ্দিন রনি
হিসাববিজ্ঞান বিভাগ
নোয়াখালী সরকারি কলেজ

আর এ