মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

| ৬ কার্তিক ১৪৩১

বিভিন্ন মাত্রায় দুষণের শিকার ঢাকা : দেখার কেউ নেই

তারেক রহমান

বিভিন্ন মাত্রায় দুষণের শিকার ঢাকা : দেখার কেউ নেই

ঢাকা, মার্চ ০৭, ২০২৩ : দূষণ, দূষণ আর দূষণ। বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ, প্লাস্টিকদূষণ-সব ধরনের পরিবেশদূষণ বাংলাদেশকে আঁকড়ে ধরেছে আষ্টেপৃষ্ঠে। কোনো প্রতিকার নেই, দূষণ বেড়েই চলেছে। দেশের মানুষ বেঁচে আছে অসহায় অবস্থায়।

দেশে বায়ুদূষণ এখন মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বায়ুদূষণে আক্রান্ত সারা দেশ। প্রতিটি জেলাতেই বায়ুদূষণের হার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অন্তত তিনগুণ বেশি। গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলে বায়ুর মান তুলনামূলকভাবে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান সবচেয়ে বেশি অস্বাস্থ্যকর। বিশ্বের খারাপ বায়ুর মানের তালিকায় মাঝে-মাঝেই ঢাকা শীর্ষস্থানে চলে যায়। অন্য সময় দুই বা তিন নম্বরে থাকে।

একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা বিশ্বের প্রধান প্রধান শহরের বায়ুর মান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এ সংস্থা জানায়, গত ৫ মার্চ ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) রেকর্ড করেছে, তাতে ঢাকার স্কোর ছিল ৩২২। বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ এ স্কোর। ঢাকার পরেই ছিল চায়নার বেইজিং, পাকিস্থানের লাহোর এবং ভারতের মুম্বাই শহর। একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এর উপরে গেলে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা মানুষের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।

বায়ুদূষণে গড় আয়ু কমছে

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী এ দেশের মানুষের গড় আয়ু এখন প্রায় ৭৩ বছর। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা মনে করেন, বায়ুদূষণ না থাকলে এবং বায়ুর মান স্বাস্থ্যকর থাকলে মানুষের গড় আয়ু অবশ্যই আরও বেশি থাকত। লাইফ ইনডেক্সের গবেষণা তথ্যে দেখা যায়, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু প্রকৃতপক্ষে কমছে। ১৯৯৮ সালে বায়ুদূষণের কারণে গড় আয়ু কমেছিল প্রায় দুই বছর আট মাস। ২০১৯ সালে একই কারণে সারা দেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে পাঁচ বছর চার মাস।

আর রাজধানী ঢাকায় কমেছে প্রায় সাত বছর সাত মাস। বায়ুদূষণের কারণে রাজধানীর বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যহানি কতটুকু ঘটছে তা প্রত্যেক ঢাকাবাসীই অনুভব করেন। দূষিত বায়ু ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার ঘরেই যায়, বায়ুর চলাচল তো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বায়ুদূষণের ফলে ফুসফুসের রোগ, বক্ষব্যাধিসহ বিভিন্ন রোগ বাড়ছে। মৃত্যুও বাড়ছে। অতএব গড় আয়ু কমবেই।

বিভিন্ন গবেষণায় বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসাবে যেসব উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ইটভাটা, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প-কারখানা, যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া, বিভিন্ন নির্মাণকাজের ধুলা, সমন্বয়হীন সংস্কারকাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, শহরের বর্জ্য উন্মুক্ত জায়গায় পোড়ানো, নিম্নমানের কয়লা ও তরল জ্বালানি ব্যবহার ইত্যাদি। কারণগুলো যেহেতু চিহ্নিত, তাহলে তা দূর করা যাবে না কেন? এটা করতে পারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন গুরুতর এ সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করা এবং সমস্যা সমাধানে আন্তরিক উদ্যোগ নেওয়া। আমরা অসহায় জনগণ কি কিছু করতে পারি?

পানিদূষণ সর্বত্র, মানুষ যাবে কোথায়?

পরিবেশদূষণের ক্ষেত্রে বায়ুর পরেই রয়েছে পানিদূষণ। দেশের কোথায় দূষণমুক্ত পানি পাওয়া যাবে, সেটা একটা গবেষণার বিষয়। দেশে পানির উৎস নদী ও জলাশয়। জলাশয় বলতে পুকুর, দীঘি, বিল ও হাওড়ই প্রধান। এ ছাড়াও ভূগর্ভ থেকে তোলা পানিও আমাদের প্রয়োজন মেটায়। নদীমাতৃক বাংলাদেশে পানির প্রধান উৎস নদী। অসংখ্য নদনদী দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। নদীর পানি দিয়েই কৃষিকাজে সেচসহ মানুষের সব চাহিদা মেটানো হয়।

দেশে নদীর প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য কোথাও নেই। কোনো কোনো সূত্রমতে দেশে নদীর সংখ্যা ২৩০ এবং এ সংখ্যাটিই সাধারণত উল্লেখ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০০৫ সালে বলেছিল, নদীর সংখ্যা ৩১০। পরে ২০১১ সালে বলেছে, দেশে ছোট-বড় নদীর মোট সংখ্যা ৪০৫ এবং এই সংখ্যাতেই পাউবো স্থির রয়েছে। নদীর সংখ্যা যাই হোক, প্রশ্ন হচ্ছে দূষণমুক্ত কোনো নদী দেশে আছে কি? প্রতিটি নদীই তো দখল-দূষণের শিকার। কোনো নদীই মানুষকে দূষণমুক্ত পানি দিতে পারছে না। এজন্য কি নদী দায়ী, না মানুষ? মানুষের কর্মকাণ্ডেই নদীর পানি দূষিত হয়েছে এবং হচ্ছে। ফলে মানুষই বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নদীর দূষণ দেখতে রাজধানী ঢাকা থেকে দূরে যেতে হবে না। মহানগরীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গার কী অবস্থা হয়েছে দখলে-দূষণে, তা জনগণ, সরকার, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবাই জানে। সদরঘাট দিয়ে যারা লঞ্চে বা বিভিন্ন নৌযানে যাতায়াত করেন, তারা আরও ভালো জানেন। নদীর পানি কালো হয়ে গেছে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। এই নদীতে এককালে মাছ পাওয়া যেত। সেটা এখন ইতিহাস। মাছ কেন, পোকামাকড়ও এই দূষিত বিষাক্ত পানিতে বাঁচতে পারে না। বুড়িগঙ্গা নদীর দুই তীর দখলমুক্ত করতে মাঝে-মাঝেই অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ হলেই আবার দখল হয়ে যায়। এভাবেই চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বুড়িগঙ্গার তলদেশে এখন বালু বা মাটি নেই। আছে পলিথিন, প্লাস্টিক ও শক্ত বর্জ্যরে আবরণ। এ আবরণ কত মিটার পুরু, সেটিও গবেষণার বিষয়।

ঢাকা ওয়াসা বুড়িগঙ্গার দূষিত পানি পরিশোধন করে ঢাকাবাসীকে সরবরাহ করে। ওয়াসার দাবি পরিশোধিত এই পানি বিশুদ্ধ এবং পান করার যোগ্য। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি কি তাই? নগরবাসী ওয়াসার পানি পাইপলাইনে পান। তারপর সেটা গ্যাসের চুলায় ভালোভাবে ফুটিয়ে নেন যাতে জীবাণুমুক্ত হয়। এরপর ফুটানো পানি ঠাণ্ডা করে ফিল্টারে দেওয়া হয় ময়লামুক্ত করার জন্য। তবেই ওয়াসার পানি পান করার উপযুক্ত হয়।

ওয়াসাকে পানির জন্য দাম দিতে হয় এবং এই দাম নিয়মিত বাড়ানো হচ্ছে। চুলা ব্যবহারের জন্য গ্যাস কিনতে হয়। সেটার দামও দফায় দফায় বাড়ছে। ওয়াসার পানি ময়লামুক্ত করতে ফিল্টার মেশিন কিনতে হয় কয়েক হাজার টাকা দিয়ে। এই মেশিনের ফিল্টার পরিবর্তন করতে হয় নিয়মিত, না হলে মেশিন কাজ করবে না। বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি পান করতে নগরবাসীকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। আর এই খরচ শুধু বাড়ছেই। শুধু ঢাকা নয়, সব মহানগরীতেই ওয়াসার মতো সংস্থা আছে পানি সরবরাহের জন্য। সবখানেই একই অবস্থা। শহরাঞ্চলের মানুষ পানিদূষণের শিকার। গ্রামাঞ্চলের মানুষ খাবার পানির জন্য জলাশয়ের ওপর নির্ভর করতে পারে না দূষণের কারণে। তারা নলকূপের পানি ব্যবহার করে, যেখানে সুযোগ আছে। নলকূপের পানিতেও আবার আর্সেনিক দূষণের আশঙ্কা। মানুষ যাবে কোথায়?

সরব ঘাতক শব্দদূষণ

এরপর আছে শব্দদূষণ। অনেকে শব্দদূষণকে শব্দসন্ত্রাস নামে আখ্যায়িত করেন। কৃত্রিম বা যান্ত্রিকভাবে সৃষ্ট শব্দ যখন মাত্রা অতিক্রম করে তখন পরিবেশ দূষিত হয়, মানুষের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একজন বিশেষজ্ঞের অভিমত-‘শব্দদূষণের মতো সরব ঘাতক আর নেই। সাধারণভাবে আমরা যে শব্দ চাই না, সেটাই শব্দদূষণ। মানুষ ও প্রাণীর শ্রবণসীমা অতিক্রম করে এবং শ্রবণশক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, সে শব্দকেই শব্দদূষণ হিসাবে জেনে থাকি।’

বিশ্বের বাসযোগ্য শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান তলানিতে। এর অন্যতম প্রধান কারণ শব্দদূষণ। এ দূষণ এখন ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ নেই, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। কারণ দেশে মোটরগাড়ি ও যান্ত্রিক যানবাহনের সংখ্যা আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন শত শত নতুন গাড়ি রাস্তায় নামছে। এত গাড়ির কারণে যানজট বাড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শব্দদূষণ। প্রতিটি গাড়ি ও যান্ত্রিক বাহন কারণে-অকারণে তীব্র মাত্রায় হর্ন বাজাতে থাকে। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

এখন আবার রাস্তায় হাজার হাজার মোটরবাইক দেখা যায়। এগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে সস্তা ও সহজলভ্য। তরুণ-যুবকরাই এগুলোর চালক। ঢাকাবাসী নিশ্চয়ই দেখেছেন তরুণ-যুবকরা তীব্র শব্দ সৃষ্টি করে দ্রুতগতিতে বাইক চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় এরা দল বেঁধে উদ্দাম গতিতে বাইক চালাচ্ছে শহরের রাস্তায়। এরা কারা সহজেই অনুমেয়। ট্রাফিক পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষও যেন এদের ব্যাপারে নির্বিকার। শুধু ঢাকা নয়, অন্যান্য শহরেও একই চিত্র।

ঢাকা মহানগরী এবং অন্যান্য শহরাঞ্চলে মাইকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বা অপব্যবহার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ফুটপাতের হকার এবং রাস্তায় চলমান হকাররাও রিকশা অথবা ভ্যানগাড়িতে মাইক লাগিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজাতে থাকে বিনা বাধায়। আমার জানামতে, মাইক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন আছে। যে কোনো অনুষ্ঠানে বা যে কোনো প্রয়োজনে মাইক ব্যবহার করতে হলে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়। পাকিস্তানি শাসনামলে এবং স্বাধীন বাংলাদেশেও এ আইনের প্রয়োগ দেখেছি। এখন কি আইনটি বাতিল বা স্থগিত হয়ে গেছে? আমার জানা নেই। কর্তাব্যক্তিরা বলতে পারবেন। আমি শুধু অসহায়ভাবে দেখছি যে, মাইকের অবাধ অপব্যবহার চলছে। মাইকের শব্দে লেখাপড়া করতে পারি না, ঘুমাতেও পারি না। শ্রবণশক্তি তো ইতোমধ্যেই আরও অনেকের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সারা দেশে ২০ শতাংশ মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত। এই ২০ শতাংশের মধ্যে ৩০ শতাংশই শিশু। যারা ট্রাফিক পুলিশ, রাস্তায় ডিউটি করেন, তাদের ১১ শতাংশের শ্রবণ সমস্যা আছে। আরেক রিপোর্টে দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬১ শতাংশ মানুষ শব্দদূষণের জন্য হতাশা ও উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শব্দদূষণের কারণে এখন ২০ শতাংশ মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত। শব্দদূষণ পরিস্থিতি যদি অপরিবর্তিত ও অনিয়ন্ত্রিত থাকে, তাহলে তো দেশের ১০০ শতাংশ মানুষেরই বধির হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। শব্দদূষণ প্রতিরোধে শুধু সামাজিক সচেতনতা নয়, কঠোর আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

মারাত্মক পর্যায়ে প্লাস্টিকদূষণ

সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক আমাকের জীবনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা বিশ্বেই এখন প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু অন্য দেশে আধুনিক প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা আছে, ব্যবহৃত প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার হয়। ফলে প্লাস্টিক সেখানে দূষণ সৃষ্টি করে না। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র ভিন্ন। এখানে পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করেই রাস্তায়, ড্রেনে, খালে, নদীতে বা জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক পচে না বা গলে যায় না। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, মাটির উর্বরা শক্তি কমায়, খাল বা নদীর তলদেশে জমা হয়ে মারাত্মক ধরনের দূষণ সৃষ্টি করে। সভ্যতার অবদান প্লাস্টিক আমাদের দেশে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্লাস্টিকদূষণ থেকে বাঁচতে হলে এটির ব্যবহার পর্যাপ্ত পরিমাণে কমাতে হবে। আমাদের দেশে পাট ও কাপড়ের উৎপাদন পর্যাপ্ত। পাট ও কাপড়ের ব্যাগ উৎপাদন করে সেগুলো ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে। পাট-কাপড়ের ব্যাগ একাধিকবার ব্যবহার করা যায়, তদুপরি এগুলো পচনশীল, তাই মাটির সঙ্গে মিশে যাবে, পরিবেশদূষণ ঘটাবে না। প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও নিরুৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে প্লাস্টিকের বিকল্পকে উৎসাহিত করতে হবে। এতে দেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পের উন্নতি হবে। পরিবেশও রক্ষা পাবে।

বিপন্ন পরিবেশ, বিপন্ন মানুষ

বাংলাদেশে পরিবেশদূষণ সব সীমা ছাড়িয়ে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি পৃথক মন্ত্রণালয় ছাড়াও অধিদপ্তর ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে, যারা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে। এসব সংস্থার জনবলও কম নয়। তারপরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন? সমস্যা হচ্ছে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাব।

পরিবেশদূষণও এক ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংসতা। একে কাঠামোগত সহিংসতা (structural violence) হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। এই সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে দেশের বিপন্ন মানব প্রজাতিকে রক্ষা করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতি অবশ্যই হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নতিই শেষ কথা নয়। বেঁচে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি ও রক্ষা করাই বড় কথা। অসুস্থ পরিবেশে সুস্থ জাতি গড়ে উঠতে পারে না।

আর এ